SSC শিক্ষক নিয়োগে নাটকীয় মোড় । সুপ্রিম কোর্টের কড়া সতর্কবাণী এসেছে, আদালত কখনো ফ্রেশারদের নতুন পরীক্ষায় বসতে বলেনি। চাকরিপ্রার্থীদের ভাগ্য নিয়ে এখন যেন একটা টানাটানি চলছে। এর মাঝখানে আছে হাজার হাজার বেকার যুবক যুবতীদের স্বপ্নগুলো। দুর্নীতির সেই ভয়ংকর ঝড় যে শূন্য পদগুলোকে গিলে খেয়েছিল। সেই জায়গা ভরাট করার জন্য যখন নতুন নিয়োগ পরীক্ষার ঘোষণা এল। ঠিক তখনই সর্বোচ্চ আদালত থেকে একটা ঐতিহাসিক মন্তব্য এসে পড়ল।
দেশের সবচেয়ে বড় আদালত এবার যেন একটা কঠিন অভিভাবকের মতো দাঁড়িয়েছে। রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলছিল সুপ্রিম কোর্টে। বিচারপতিরা সেখানে খুব স্পষ্টভাবে এবং কড়া ভাষায় বলে দিলেন। আদালত কখনোই ফ্রেশার বা নতুন চাকরিপ্রার্থীদের এই নতুন পরীক্ষায় অংশ নিতে বলেনি। তাহলে এই পরীক্ষা আয়োজনের কারণ কী। এই প্রশ্নটা শুধু আদালতেরই নয়। এটা সেই সব পরীক্ষার্থীদেরও মনে আসছে। যারা প্রথমবার চাকরির আশায় প্রস্তুতি নিচ্ছেন বুক বাঁধা করে।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল শুধু একটা জিনিস। ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতির জন্য যাদের চাকরি বাতিল হয়েছে। সেই অযোগ্য লোকদের বাদ দিয়ে যোগ্য প্রার্থীদের আবার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নেওয়া। আদালত নির্দেশ দিয়েছিল দুর্নীতির কারণে তৈরি শূন্য পদে আবার পরীক্ষা হবে। কিন্তু এরপর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে একটা জটিলতা দেখা গেল। নতুন শূন্য পদ যোগ করে এবং কিছু নতুন নিয়ম চাপিয়ে। এই পরীক্ষাকে এমনভাবে গড়ে তোলা হলো যাতে ফ্রেশাররাও অংশ নিতে পারে।
এই বিষয়টাই নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এবার আলোকপাত করেছে। বিচারপতিদের কড়া মন্তব্য ছিল এরকম। আদালত এই বিশেষ পরিস্থিতিতে শুধু সেই যোগ্য প্রার্থীদের কথা ভেবেছিল। যারা আগে একবার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও দুর্নীতির জন্য সুযোগ পায়নি। কাউকে বাড়তি ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়নি। কিন্তু নতুন করে ফ্রেশারদের ডেকে একটা জটিলতা তৈরি করা হলো কেন। আদালতের মূল ফোকাস ছিল সেই দাগিদের সরানো। এবং সেই সঙ্গে যোগ্য হয়েও বঞ্চিতদের সুবিধা দেওয়া।
এই নাটকীয় পরিবর্তন এখন রাজ্য সরকারের নিয়োগ প্রক্রিয়াকে একটা নতুন প্রশ্নের সামনে নিয়ে এসেছে। একদিকে যোগ্য শিক্ষকদের ফর্ম পূরণের জন্য অতিরিক্ত সময় দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে প্রশ্ন উঠছে এই পরীক্ষা ফ্রেশারদের জন্য নয়। অযোগ্যদের সরিয়ে দ্রুত শূন্য পদ পূরণের যে লক্ষ্য ছিল সুপ্রিম কোর্টের। তা কি আরও জটিলতায় পড়ল। নাকি রাজ্য কমিশন চায় দুর্নীতির জেরে তৈরি শূন্য পদগুলোকে বর্তমান প্রক্রিয়ার সঙ্গে মিশিয়ে দিতে। উত্তর যাই হোক না কেন। এই রায়ে স্পষ্ট যে নিয়োগের পবিত্রতা বজায় রাখতে সর্বোচ্চ আদালত তার নজরদারি আরও কঠোর করেছে। কমিশনের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে কোনো দ্বিধা করেনি। চাকরিপ্রার্থীদের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে সবার চোখ এখন আদালতের পরবর্তী নির্দেশের দিকে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন