Top News

তেনাদার কথা ও তাদের স্হান

 পুকুর ঘাটে কিসের ছায়া, কারা কথা কয়! যুগে-যুগে কালে-কালে ভূত নিয়ে এমন অনেক আলোচনা আছে পৃথিবীতে। কথায় আছে সর্ষের মধ্যেই ভূত তাই সর্ষে দিয়েই ভূত তাড়ানো উচিত। 

  যুক্তিবাদী বিজ্ঞানমনস্করা সবসময়ই বলেছেন, ভূত যে রয়েছে, তার প্রমাণ কোথায়? এর উত্তরে আবার ভূতবাদীরা পাল্টা প্রশ্ন করেছেন তেনারা যে নেই, তার প্রমাণটাই বা কী? 


ভূতের গল্প বা ভূত রয়েছে এমন জায়গা কম-বেশি সব মানুষেরই খুব পছন্দের। আসুন জেনে নেওয়া যাক কলকাতার মধ্যেই বেশকিছু জায়।গার কথা।

 সকলেই জানেন যে কলকাতা ভারতের একটি অন্যতম জায়গা। একদিকে ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য স্থান অপরদিকে, অত্যন্ত সমৃদ্ধ সংস্কৃতির স্হান।


১. জাতীয় গ্রন্থাগার (National Library)


১৮৩৬ সালে নির্মিত এই লাইব্রেরি দুটি জিনিসের জন্য পরিচিত; এক বইয়ের বিরল সংগ্রহ দুই অলৌকিক কার্যকলাপের জন্য। 

কথিত আছে লর্ড মেটকাফের স্ত্রী এই গ্রন্থাগারে ঘুরে বেড়ায়। অনেকের মতে, তারা অনুভব করেছিল যে তারা একা বই পড়ার সময় তাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে কেউ। কোনো বই যদি সঠিক জায়গায় না রাখেন তবে অনুভূত হয়ে থাকে। প্রাঙ্গনের রক্ষীরা প্রায়শই একজন মহিলার গলার আওয়াজ শুনতে পান।

ছবি সৌজন্য: গুগল


২.পুতুল বাড়ি (Doll House)


শুধু ছোটদের কেনো বড়দের ও পুতুল খুব পছন্দের। তবে যারা The Conjuring, Annabelle, The Child's Play series বা Dexter's Laboratory episode, Dee Dee's Room দেখেছেন, তারা এতটা নিশ্চিত হতে পারবেন না যে পুতুল খুবই পছন্দের। পুতুল বাড়ি কলকাতার অন্যতম ভূতড়ে বাড়ি যা বাইরে থেকে হঠাৎ করে দেখলেই যেকোনো মানুষ ভয় পেয়ে যাবে। কথিত আছে যে প্রাচীনকালে কলকাতার এই পোড়ো বাড়িতে বসবাসকারী ধনী জমিদাররা এখানে বেশ কিছু নারীকে যৌন নিপীড়ন ও হত্যা করেছিল, যারা এখন এখানে ভূত হয়ে ঘুরে বেড়ায়। এই বাড়িতে প্রায়ই চুড়ি, নারীদের হাসা বা হাজার শব্দ শুনতে পাওয়া যায়।

 
ছবি সৌজন্য: গুগল


৩. রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশন


কখনো রাতের বেলা রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশন থেকে ট্রেনে আসার চেষ্টা করেছেন?? তবে আপনি একেবারেই এসব চেষ্টা করবেন না। বলা হয় যে রবীন্দ্র সরোবরে আত্মহত্যার ঘটনা সবচেয়ে বেশি। তাই এখানে যারা আত্মহত্যা করেছে তাদের আত্মারা এখনও প্ল্যাটফর্মে গভীর রাতে ঘুরে বেড়ায়। যাত্রীদের মতে, যখন প্ল্যাটফর্ম নির্জন হয়ে যায় তখন ছায়া দেখা যায় এবং সেইসব ছায়াকে ট্র্যাকের ওপর লাফিয়ে পড়তে এবং অদ্ভুত শব্দ শুনতে পায়। তারা তাদের উপস্থিতি দেখানোর চেষ্টা করে।

 
ছবি সৌজন্য: গুগল


৪.ভূত বাংলো বা হেস্টিংস হাউস


হেস্টিংস হাউস ফোর্ট উইলিয়াম প্রেসিডেন্সির প্রথম গভর্নর-জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংসের এর জন্য নির্মিত। বর্তমানে এখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি মহিলা কলেজ। কথিত আছে স্টাফ এবং ছাত্রীরা একজন ইংরেজকে কলেজের প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে দেখে এবং কলেজের বিশাল ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং সে আর কেউ নয় স্বয়ং হেস্টিংস সাহেব।

লোকেরা সিঁড়ি বেয়ে পায়ের শব্দ শুনেছে বলে জানিয়েছে। বিকেলে কলেজ শেষ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাসে থাকার সাহস রাখেনা।

 
ছবি সৌজন্য: গুগল


৫. সাউথ পার্কস্ট্রিট কবরস্হান 


১৯৬৭ সালে এই কবরস্হান ।পার্ক স্ট্রিটের কবরস্থান সম্ভবত কলকাতার সবচেয়ে বিখ্যাত ভুতুড়ে জায়গা। এই প্রাচীন কবরগুলো বেশিরভাগই ব্রিটিশ সৈন্যদের। কবরস্থানটির নিজস্ব একটি অনন্য সৌন্দর্য রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে লম্বা গাছপালা, প্রাচীন কবর এবং প্রশান্তির অনুভূতি। এখানে কোনো শক্তি অনুভূত হলেও তারা কখনো কারোর ক্ষতি করেননি বলে জানা যায়। দেয়ালে ঝাপসা ছায়ার উপস্থিতি এবং সাথে অদ্ভুত রকমের শব্দ শোনা যায়। এখানে কিছুক্ষণ থাকার পরই নাকি অনেকের শ্বাসকষ্ট শুরু হয় যদিও তারা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ব্যক্তি নন।

ছবি সৌজন্য: গুগল



৫. রাইটার্স বিল্ডিং 


৭০ এর দশকে এই বিল্ডিং নির্মিত হয়। ৮ই ডিসেম্বর, 1930 তারিখে, বিনয়, বাদল এবং দিনেশের ত্রয়ী ভবনের দিকে রওনা হয় এবং তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক, কর্নেল সিম্পসনকে হত্যা করে, যিনি ভারতীয় বন্দীদের সাথে নৃশংস আচরণ করার জন্য পরিচিত ছিলেন। এটা বিশ্বাস করা হয় যে কর্নেল সিম্পসন তিনজন তরুণ বিপ্লবীর হাতে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই তার আত্মা এই জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। প্রায়ই সময় এখানে পায়ের শব্দ, হাঁসি এবং চিৎকার শুনতে পাওয়া যায়। এটিও বলা হয় যে এখানে কোনও কর্মচারী বা কর্মী সন্ধ্যার পরে থাকার ঝুঁকি নেয় না। 

ছবি সৌজন্য: গুগল


 ৬.হাওড়া ব্রিজ 


যা ব্রিটিশ সরকার ১৯৪৩ সালে তৈরি করেন বছরের পর বছর ধরে, সেতু থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে। কুস্তিগীররা হুগলি নদীর ঘাটে ভোরের দিকে অনুশীলনের সময়ে প্রায়ই জলের মধ্যেই সাহায্যের জন্য হাত দেখতে পয়। বলা হয় যে যারা ডুবে যাওয়া ব্যক্তিকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছে, তারাও ডুবে মারা গেছে। হাতগুলো আত্মার নাকি আসল মানুষের, কেউ জানে না। কেউ কেউ সাদা পোশাক পরা একজন মহিলাকে কান্নাকাটি করতে এবং অনুনাসিক স্বরে তাদের নাম ডাকতে দেখেছেন বলে দাবি করেছেন। তাই আপনি যদি হুগলি নদীর ধারে কেউ আপনাকে নাম ধরে পেছন থেকে ডাকছে শুনতে পান, তাহলে ভুলেও পেছন ফিরে তাকাবেন না।

 
ছবি সৌজন্য: গুগল

এছাড়াও রয়েছে উইপ্রো অফিস,কলকাতা খিদিরপুর ডক,রয়্যাল টার্ফ ক্লাব এবং নিকোলাস ঘাট। 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন